রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীর বেতনের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। বিশেষ এ তহবিল থেকে ঋণ চেয়ে ২ হাজার ২০০টি শিল্পকারখানা আবেদন করেছে। ৪৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বেতন দিতে ৩ হাজার ৪৭ কোটি টাকা ঋণ চেয়েছে। সোমবার (৪ মে) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আবেদনের বিপরীতে ইতোমধ্যেই ২ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২ মে ছিল আবেদনের শেষ দিন। সেই সময় পর্যন্ত মোট ২ হাজার ২০০টি আবেদন জমা পড়ে। যার বিপরীতে টাকার অঙ্কে দাবি করা হয়েছে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে ২০০ হাজার কোটি টাকা ছাড়া করা হয়েছে। বাকিটা দু-একদিনের মধ্যেই ছাড় করা হবে। এর আগে সরকারের নির্দেশনায় ২ এপ্রিল করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করে সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সার্কুলারে বলা হয়, ৫০০০ টাকার বিশেষ প্যাকেজ থেকে ঋণ পাবে উৎপাদনের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ পণ্য রফতানি করছে এমন সচল প্রতিষ্ঠান। ঋণের অর্থ দিয়ে কেবল শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাবে। সুদবিহীন এ ঋণে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে ব্যাংকগুলো। নির্দেশনা বলা হয়েছিল, রফতানি বাণিজ্যের ওপর নভেল করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় সচল রফতানিমুখি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ঋণ/বিনিয়োগ প্রদানের উদ্দেশ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দ হতে আর্থিক প্রণোদনা তহবিল গঠন করা হয়েছে। এ তহবিল হতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিনা সুদে বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের চাহিদা মোতাবেক ঋণ/বিনিয়োগ হিসাবে অর্থ প্রদান করবে। কেবলমাত্র শ্রমিক-কর্মচারীদের সর্বোচ্চ তিন মাস বেতন/ভাতা পরিশোধের জন্য ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহণ করতে পারবে। শুধু সচল রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠান এ তহবিল থেকে ঋণ সুবিধা পাবে। যে সব শিল্প প্রতিষ্ঠান মোট উৎপাদনের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ রফতানি করে তারা রফতানিমুখি শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং যে সকল প্রতিষ্ঠান তাদের শ্রমিক-কর্মচারীদেরকে বিগত ডিসেম্বর ২০১৯, জানুয়ারি ২০২০ এবং ফেব্রুয়ারি ২০২০ মাসের বেতন পরিশোধ করেছে তারা সচল শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হবে। বেতনের অর্থ শ্রমিক-কর্মচারীর ব্যাংক হিসাবে লেনদেন করতে হবে। কোনো প্রকার নগদ লেনদেন করা যাবে না। যেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ব্যাংক হিসাব নেই। তাদের মালিক নিজ উদ্যোগে ব্যাংক হিসাব খুলে দেবে। এসব হিসাবে কোনো চার্জ আরোপ করতে পারবে না। ঋণ নেয়ার পর ৬ মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ২ বছরে ১৮টি সমান কিস্তিতে ব্যাংককে সার্ভিস চার্জসহ ঋণ পরিশোধ করবে। ঋণের কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধিত না করলে প্রচলিত নিয়মে শ্রেণিকরণ করতে হবে এবং খেলাপি হিসেবে বকেয়া কিস্তির উপর ২ শতাংশ হারে দণ্ড সুদ আরোপ করা যাবে।